পবিত্র ঈদুল ফিতরে করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা


প্রিয় পাঠক বিশ্বজুড়ে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ। ইসলাম ধর্মে সবচেয়ে বড় উৎসব হলো ঈদ। সারা বিশ্বে মুসলমানের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎস ঈদুল ফিতর।ঈদ মানে খুশি। মুসলমানের জীবনে আনন্দ বার্তা নিয়ে আসে ঈদ।পবিত্র মাহে রমজান ৩০ টি রোজা পালন করার পরে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ঈদ আসে মুসলমানদের মাঝে । কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না ঈদুল ফিতরে কি করণীয় বা কি বর্জনীয়। 

পবিত্র ঈদুল ফিতরে :করণীয় ও  বর্জনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা

পোষ্ট সূচিপত্রঈদুল ফিতরে কি করণীয় আর কি বর্জনীয় এই বিষয় নিয়ে আজ বিস্তারিত আলোচনা করব আপনাদের সাথে। আপনারা যারা এখনো জানেন না যে ঈদুল ফিতরে কি করণীয় আর কি বর্জনীয়। জানতে হলে আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন। চলুন জানা যাক ঈদুল ফিতরের করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে তথ্য

ভূমিকা

মুসলমানেরা অনাবিল আনন্দের মাধ্যমে উদযাপন করে থাকে। প্রত্যেকটি মুসলমানদের কাছে আনন্দের হয়ে ওঠো ঈদুল ফিতরের দিনটি। সিয়াম সাধনার পরে আসে প্রত্যেকটা মুসলমানদের কাছে ঈদুল ফিতরের আনন্দ দিনটি। রমজান মাসের সিয়াম আদায় করার পরে সব দুঃখ কষ্ট ভুলে শাওয়াল মাসের এক ফালি চাঁদ দেখার পরে গুনতে থাকে সবাই।

এরপরে প্রত্যেকটা মুসলিম উৎসবে আমেজে মেতে উঠে। পবিত্র মাহে রমজানের মাধ্যমে নিজের অতীতের জীবনের সকল পাপ থেকে মুক্তি হওয়ার অনুভূতি করে পূর্ণতা লাভ করে ঈদের খুশিতে। ঈদুল ফিতরের কি করনীয় আর কি বর্জনীয় আমরা অনেকেই জানিনা।

আপনারা যারা এখনো জানেন না ঈদুল ফিতরে কি করণীয় আর কি বর্জনীয৷তাদের জন্য আজকে আর্টিকেলটি চলুন জানা যাক ঈদুল ফিতরে কি করণীয় আর কি বর্জনীয় ।

ঈদে করণীয়

আল্লাহর অসীম রহমতে মুসলমানদের কাছে ঈদ একটি বিশেষ নিয়ামত। কিন্তু আমরা এই দিনটিকে নিয়ামত হিসেবে গ্রহণ করি না। ঈদে অনেক কাজ আছে যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নিকটবর্তী হতে পারি ঈদ উদযাপনে একটি ইবাদতে পরিণত হতে পারে। এখন আপনাদের সঙ্গে সেই সব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ফরজের নামাজ জামাতেে আদায় করা

আমরা অনেক মুসলমান ফজরেে নামাজ আদায় করি না। ঈদের জন্য ফরজ নামাজের জামাতে পড়ার গুরুত্ব দেয় না । কিন্তু ফরজ নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন যদি তারা এশা ও ফরজ নামাজের মধ্যে কি আছে তা জানতে পারত তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এই দুইটির নামাজ জামাতে শামিল হতো।

( সহিহ বুখারি :৬১৫) তাই আমাদের প্রতিটি মুসলমানদের উচিত ফরজ নামাজ জামাতের সাথে আদায় করা।

ঈদের দিনে গোসল করা

ঈদের দিনে গোসল করার মাধ্যমে নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অর্জন করা।কেননা এই দিনে সকল মানুষ নামাজ তাদের জন্য মিলিত হয়। হযরত ওমর (রা)সূত্রে বর্ণিত যে, ঈদুল ফিতরের দিনে তিনি ঈদগাহে যাওয়ার পরে গোসল করতেন। সুনান বায়হাকি : ৫৯২০

ঈদের নামাজ আদায় করা

ঈদের দিনে প্রত্যেকটি মুসলমানদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঈদের নামাজ আদায় করা। একজন ঈমানদার বান্দা নামাজে আদায়ের মাধ্যমে বেশি আনন্দিত হয়ে থাকে। ঈদুল ফিতরের উপলক্ষে দুই রেখা ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে। প্রত্যেকটা মুসলমানদের কাছে ঈদের নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া

পায়ে হেটে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নত। উভয়ের পথের লোকদেরকে সালাম দেওয়া ওই ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য যে পথে যাবেন সে পথ না ফিরে অন্য পথে ফিরে আসতে হবে। হযরত আলী (রা) বলেছেন ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া সুন্নত। 

ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের ভাষা

ইসলাম শরীয়তে ভাষায় পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানানো একটি বিষয়। বিভিন্ন বাক্যের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। বাক্য গুলো নিচে আলোচনা করা হলো :

  • তাকাববালল্লাহ মিন্না ওয়া মিনকা ।
  • ঈদ মোবারক,, ইনশাল্লাহ,,।
  • ইদুকুম সাইদ,বলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়।

ঈদের চাঁদ দেখার পর তাকবির পাঠ করা

তাকবীর পাঠ করার মাধ্যমে আল্লাহতালা শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করা হয়। তাকবীরটি হলো আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবর। ওয়া লিল্লাহিল হামদ।আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)ঈদুল ফিতরের দিনের ঘর থেকে বের হয় ঈদগাহ পর্যন্ত এই তাকবীর পাঠ করতেন। মুসতাদরাক:১১০৬

নতুন পোশাক পরিধান করা

ঈদের নামাজ উত্তম জামা কাপড় পরিধান করে উদযাপন করা উচিত প্রত্যেকটা মুসলমানের। ঈদের দিন সকালে মানুষ একত্রে যাওয়া জামায়াতে হয়ে তাই প্রত্যেকটি মুসলমান উচিত হলো তার প্রতি আল্লাহর যে নিয়ামত তা প্রকাশের শুকরিয়া আদায় করা। নবী করীম (সাঃ) দুই ঈদে ঈদগাহে যাওয়ার সর্বোচ্চ পোশাক পরিধান করতেন।

ঈদে খুতবা শ্রাবণ করা

প্রত্যেকটা মুসলমানদের কাছে ঈদে খুতবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হযরত আব্দুল্লাহ বিন সায়েব ( রা)থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি নবী করীম (সা) এর সঙ্গে ঈদ উদযাপন করলাম। তিনি যখন ঈদের নামাজ শেষ খুতবা পড়তেন এবং যাদের ভালো লাগতো তারা বসে থেকে খুতবা শুনতেন। 

দোয়া ও ইস্তেগফার করা

মহান আল্লাহ তায়ালা ঈদের দিনে অনেক বান্দাকে মাফ করে দেন। আল্লাহ তায়ালা এমন ভাবে মাফ করে দিবেন যেন মায়ের গর্ভ থেকে নিষ্পাপ শিশু জন্ম নিলো। তাই আমাদের বেশি বেশি করে ঈদের দিনে দোয়া ও ইস্তেগফার বেশি বেশি করে পাঠ করতে হবে।

ইয়াতিম ও অভাবিকে খাবার খাওয়ানো

ইয়াতিমের খোঁজ খবর নিয়া তাদেরকে খাবার খাওয়ানো এবং সম্ভব হলে তাদের নতুন কাপড় ব্যবস্থা করে দেয়া। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, তারা খাদ্যের প্রতি আসক্ত থাকা সত্ত্বেও মিসকিনের তিন ও বান্দাকে খাদ্য দান করে। এটা ঈমানদারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সূরা আদ দাহর:৮

প্রতিবেশী খোঁজখবর নেওয়া

ঈদের সভাপতি বেশি হক আদায়ের সুযোগ তৈরি হয়। ওরা নিয়ে বলা হয়েছে তোমরা ইবাদত কর আল্লাহতালা তার সঙ্গে কোন কিছুকে শরিক করোনা। নিকট আত্মীয় সংঘ এতিম মিসকিন প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন সবার সাথে ভালো ব্যবহার করে এবং তাদের খোঁজখবর নেও।

ঈদে যা বর্জনীয়

ঈদ মুসলমান জাতির গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। আমাদের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি। ঈদের দিনে আমাদের কিছু বর্জনীয় কাজ আছে। তোক আমরা মুসলমান হয়ে অনেকেই জানিনি এই কাজগুলো কি কি বর্জনীয় কাজ।

ঈদের দিনে রোজা পালন করা

ঈদের দিনে রোজা পালন করার কাজ সমূহ যথার্থ পালন করা যাবে না। হাদিসে বলা হয়েছে ঈদের দিনে রোজা পালন করা থেকে বিরত থাকুন।

জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায়ের অলসতা করা

ঈদের আনন্দ এমনভাবে উদাসী না থাকে যে ফরজ নামাজ আদায় করে । কিন্তু এটা কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। কোরআনে বলা হয়েছে সে নামাজ আদায়কারীর জন্য দুর্ভাগ্য জিয়ারা নিজের অমনোযোগী ।

অপচয় বা অপব্যয় করা

ঈদের কেনাকাটা থেকে শুরু করে উপলক্ষে সবকিছু অপচয় বা অপব্যবহার করা হয়। কোরআনে বলা হয়েছে, আর তোমরা কোনোভাবে অপব্যয় করোনা, নিশ্চয় অপব্যয় কারী শয়তানের ভাই।

ঈদের দিনকে কবর জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করা

অনেকেই ঈদের দিন কবর জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করে থাকেন। রাসূল (সা)বলেছেন, যে এমন ইবাদত করলে যাতে আমাদের কোন নির্দিষ্টতা নেই সে পরী ত্যাজ্য হিসেবে গণ্য হবে.।

জুয়া খেলা

জুয়া খেলা শরীয়াতে বিরোধী কাজ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে মুমিনগণ নিশ্চয়ই মদ জুয়া প্রতিমা বিদি ভাগ্য নির্ধারকিশন্ত নাপাক শয়তানের কর্ম। ১৭ তোমরা তা পরিহার কর যাতে তোমরা সফল কামনা হও।

মানুষের কষ্ট দেয়া

ঈদের দিনে অনেকে এমন কাজ করে যা মানুষকে কষ্ট দেয়। ঈদের দিনে কোন মানুষকে কখনো কষ্ট দেয়া যাবে না। নবী করীম (সা)বলেছেন, মুসলিম ঐ ব্যক্তি যার হাত থেকে অন্যান নিরাপদ।

লেখক ও শেষ মন্তব্য 

আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করছি করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা। আমরা মুসলমান হয়ে অনেকেই জানিনা ঈদুল ফিতরের করণীয় ও বর্জনীয় সম্পর্কে তাই আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম আপনার যারা জানেন না তারা আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জানতে পারেন।

যদি আজকের আর্টিকেলটা আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। আর নতুন নতুন তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত ভিজিট করবেন। ধন্যবাদ।আল্লাহাফেজ  

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url